বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:২২ অপরাহ্ন

পাবনায় বেতন চাওয়ায় রেস্তোরাঁ কর্মচারীদের নির্যাতন

পাবনা প্রতিনিধিঃ পাবনায় রেস্তোরাঁ শ্রমিকদের দিনের পর দিন বেতন না দিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে মালিক নাইম হোসেনের বিরুদ্ধে। আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর প্রতিষ্ঠানের কোনো কর্মীকেই প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বেতন দেননি। বেতন-ভাতার দাবিতে মালিককে চাপ দিলে উল্টো মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন শ্রমিকরা।

শনিবার (১২ মার্চ) রাতে ভুক্তভোগী মানিক হোসেন নামের এক কর্মচারী এ বিষয়ে সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

অভিযোগে রাজমহল রেস্টুরেন্টের প্রধান শেফ মানিক জানান, গত বছর রেস্টুরেন্ট চালুর সময় খুলনা থেকে আমাদের কয়েকজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। মালিক নাইম হোসেনের অনুরোধে মাসিক ৩৫ হাজার টাকা বেতনের চুক্তিতে আমি কাজে যোগ দিই। কিন্তু প্রথম মাসেই আমাকে কৌশলে ২৫ হাজার টাকা বেতন নিতে বাধ্য করেন তিনি। এরপর থেকে ২০ হাজারের বেশি বেতন দেননি। প্রতিবাদ করলেই হুমকি-ধমকি দেন নাইম। গত মাস থেকে সেই টাকাও দেননি।

আমার বাড়িতে স্ত্রী-সন্তান রয়েছে। গত দুদিন আমার বাচ্চার দুধও কিনতে পারেনি স্ত্রী। তারা না খেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে বলেই কান্নায় ভেঙে পড়েন মানিক।

তিনি আরও বলেন, বাচ্চা ও স্ত্রীর ক্ষুধার কষ্ট সহ্য করতে না পেরে শুক্রবার (১১ মার্চ) রাতে অন্তত দুই হাজার টাকা চেয়ে আমি মালিক নাইমের সঙ্গে দেখা করি। তিনি টাকা না দিয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে গালাগাল ও মেরে ফেলার হুমকি দেন। একপর্যায়ে মারতে শুরু করলে আমি সেখান থেকে চলে আসি।

শিহাব নামের এক শ্রমিক জানান, ফুড কোর্ট অপারেটর পদে ১ মাস ২০ দিন কাজ করেছি। আমার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা রিসেপশনিস্ট পদে কাজ করতেন। বেতন ঠিকমতো না দেওয়ায় কাজ ছেড়ে দিয়েছি। বকেয়া বেতন চাইলেই উনি দুর্ব্যবহার, ভয়ভীতি দেখান। দিনের পর দিন বেতন না পেয়ে অন্তত ৬ থেকে ৮ জন কর্মচারী কাজ ছেড়ে চলে গেছে।

কাজ ছেড়ে খুলনায় চলে যাওয়া ওয়েটার মামুন বলেন, কোনো মাসেই মালিক ঠিকমতো বেতন দেয়নি। মারধর করায় আমি কাজ ছেড়ে চলে এসেছি।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে রাজমহল রেস্টুরেন্ট মালিক নাইম হোসেন বলেন, ব্যবসায়িক লোকসানের মধ্যেও আমি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা সঠিকভাবে পরিশোধ করে আসছি। দু-একজন কর্মচারী আমার প্রতিষ্ঠানের সুনাম নষ্ট করতে ব্যবসায়িক প্রতিপক্ষের ইন্ধনে অপপ্রচার করছে।

পাবনা সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জুয়েল জানান, রাজমহল রেস্তোরাঁর কর্মচারীদের নির্যাতনের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

© All rights reserved © 2024  Ekusharkantho.com
Technical Helped by Curlhost.com